1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

স্যামসাংয়ের ভাইস চেয়ারম্যানকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০২২
  • ১৬৭ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজন পড়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সাধারণ ক্ষমা পেলেন স্যামসাং গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান।

দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্টকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে তাকে দুবার কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।

ক্ষমা ঘোষণার বিষয়টিকে সমর্থন করে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার বলছে, মহামারি পরবর্তী দেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের জন্য এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার মনে করছে, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য দেশের সবচেয়ে বড় কোম্পানির উত্তরাধিকে তার কোম্পানির হাল ধরা প্রয়োজন।

দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পাক গান-হে যে দুর্নীতির কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছিলেন তার সঙ্গে স্যামসাং গ্রুপের উত্তরাধিকারীর সম্পৃক্ততা ছিল।

দুর্নীতির কেলেঙ্কারির কারণে পাক ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন এবং তাকে কারাগারে যেতে হয়েছিল।

পাক ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

লি জে-ইয়ং ২০১৪ সাল থেকে কার্যত স্যামসাং পরিচালনা করে আসছিলেন। তিনি যখন স্যামসাং গ্রুপের দুটি কোম্পানি একত্রীকরণ করার উদ্যোগ নেন তখন শেয়ারহোল্ডাররা তীব্র আপত্তি তোলেন।

একত্রীকরণের কাজ করে কোম্পানির ওপর তাদের পরিবারের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পাক হে-গান ও সহযোগীকে ৮ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।

এ খবর ফাঁস হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার লাখ লাখ মানুষ প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে।

২০১৬-১৭ সালে বিক্ষোভকারীরা প্রতি সপ্তাহে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মোমবাতি হাতে নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ করত।

পরবর্তী সময়ে কোরিয়ার পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট পাক গান হেকে অভিশংসন করে ক্ষমতাচ্যুত করে। ২০১৭ সালে তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়।

দুর্নীতি ও অব্যস্থাপনা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন। কিন্তু তিনিও তেমন কোনো অগ্রগতি করতে পারেননি। তার ক্ষমতার শেষের দিকে দণ্ডিত সাবেক প্রেসিডেন্ট পাক গান-হেকে ক্ষমা করে দেয়া হয়।

এর পর নতুন আরেকজন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় আসেন। তিনি ক্ষমতায় আসার আট মাসের মধ্যে স্যামসাংয়ের উত্তরাধিকে ক্ষমা করে দেন।

দুর্নীতি বন্ধের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় যারা আন্দোলন করছিলেন তাদের জন্য এটি বড় এক ধাক্কা।

স্যামসাং উত্তরাধিকারী লির এ ঘটনা এই ধারণা প্রমাণ করে যে ব্যবসায়ী নেতাদের কেউ স্পর্শ করতে পারবে না এবং তারা আইনের ঊর্ধ্বে।

দক্ষিণ কোরিয়ার বড় ব্যবসা সাম্রাজ্যের মালিকরা দেশের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করেন। দেশটির শীর্ষ ১০টি কোম্পানি থেকেই আসে জিডিপির ৮০ শতাংশ। তাদের মধ্যে এলজি, হুন্দাই, লোট্টি ও এসকের মতো কোম্পানি রয়েছে।

তবে স্যামসাং সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্মার্টফোন প্রস্ততকারক হচ্ছে স্যামসাং।

বিশ্বজুড়ে তাদের পরিচিতি ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর জন্য হলেও দক্ষিণ কোরিয়ায় তাদের হাসপাতাল, হোটেল, ইনস্যুরেন্স, বিলবোর্ড, শিপইয়ার্ড ও থিম পার্কের ব্যবসা আছে।

কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির সমাজ বিজ্ঞানী ইউনকাং লি বলেন, স্যামসাং ওঅন্যান্য বড় কোম্পানিগুলো দক্ষিণ কোরিয়ায় অক্টোপাসের মতো। এই অক্টোপাস রাজনীতির সর্বোচ্চ পর্যায়কেও ধরেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কোরিয়া যুদ্ধের পরে সে দেশের সরকার এসব কোম্পানিকে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করে। তাদেরকে সস্তা বিদ্যুৎ এবং ব্যাপক কর সুবিধা দেয়া হয়।

এসব কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য শ্রমিক ইউনিয়নগুলোকে শক্ত হাতে দমন করে কোরিয়া সরকার।

ফলে এক ধরনের মনোপলি গড়ে উঠে। যার পরিণতিতে ঘুষ এবং দুর্নীতিও ছড়িয়ে যায়।

অধ্যাপক লি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে এসব কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের লঘু সাজা দেয়া হয় কিংবা সাজা দিয়েও সেটি স্থগিত করা হয়।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিচারক বলেন, শীর্ষ কর্মকর্তারা কোম্পানি পরিচালনার সাথে না থাকলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

১৯৯০-এর দশকে স্যামসাং চেয়ারম্যান ঘুষ এবং দুর্নীতির জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু তাকে এক দিনও জেল খাটতে হয়নি। ২০১৭ সালে তার ছেলের যখন পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় তখন অনেকে ভেবেছিলেন এটা হয়তো একটা টার্নিং পয়েন্ট হবে।

কিন্তু তা হয়নি। লির মামলা কয়েক বছর ধরে ঝুলতে থাকে। ঘটনাক্রমে অনেকটা কোরিয়ান সিনেমার মতো নানা দিকে মোড় নিতে থাকে।

লির কারাদণ্ড হলেও আপিল আদালত তাকে মুক্ত করে দেয়। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত পুনরায় বিচারের আদেশ দেয়। তখন তাকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

তাকে দ্বিতীয় দফা কারাদণ্ড দেবার কয়েকমাসের সরকার তাকে ‘জাতীয় স্বার্থে’ প্যারোলে মুক্তি দেয়।

তখন থেকে তিনি স্যামসাংয়ের হয়ে জনসমক্ষে আসেন। মে মাসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেন, তখন লি তার সঙ্গে দেখা করেন।

তার দণ্ড মওকুফ করে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, তিনি এখন পুরোদমে থেকে স্যামসাংয়ের নির্বাহী দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..